রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক সংঘবদ্ধ অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের গ্রেফতার, চোরাইকৃত মালামাল উদ্ধার এবং মামলার রহস্য উদঘাটন
প্রকাশের সময়: 11 Jul, 2020

গত ৩০/০৬/২০২০ খ্রিঃ তারিখ রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ রংপুরের পরশুরাম থানার কোবারু ডাক্তার পাড়া গ্রামে জনৈক মোঃ মিজানুর রহমান এর বাড়ীতে অজ্ঞাতনামা অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা রাতের বেলায় বাড়ীতে প্রবেশ করে বাড়ীর ০৪ (চার) জন লোককে অজ্ঞান করে। পরবর্তীতে উক্ত বাড়ী থেকে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায়। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে পরশুরাম থানার মামলা নং-০১, তারিখ-০২/০৭/২০২০ ইং, ধারা- ৩২৮/৪৫৭/৩৮০ দঃবিঃ রুজু হয়।

এই ঘটনাটির রহস্য উদঘাটনের জন্য রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মোহাঃ আবদুল আলীম মাহমুদ বিপিএম মহোয়দয় নির্দেশে উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) জনাব কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) জনাব মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার পিপিএম, এসি পরশুরাম জোন জনাব শেখ মোঃ জিন্নাহ আল মামুন, অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ মোহছে-উল গনি ও মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই মোঃ মনোয়ার হোসেনগণের সমন্বয়ে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়। উক্ত টিমের সদস্যগণ মামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং মামলাটি সর্বাত্মক তদন্তে সহায়তা করেন । তদন্ত টিম দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত অজ্ঞাতনামা আসামীদেরকে সনাক্ত করতে সক্ষম হন।

তদন্ত টিম রংপুর এবং গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান পরিচালনা করে গত ১০/০৭/২০২০ ইং তারিখ গাইবান্ধা জেলা হতে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত অজ্ঞান পার্টির মূলহোতা আসামী মোঃ হাফিজার রহমান (৪৪), পিতা- মৃত আঃ বাকী, সাং-বেড়া ডাঙ্গা, থানা ও জেলা- গাইবান্ধাকে গ্রেফতার করেন।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিকট হতে চোরাইকৃত ১১ (এগার) টি বিভিন্ন ধরনের মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার (কানের দুল ০২ জোড়া), চোরাইকাজে ব্যবহৃত লোহার সাবল ও চেতনানাশক ওষুধ (ডেসোপিন-১/ ডেসোডিপন-২ ট্যাবলেট) উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয় এবং গ্রেফতারকৃত অজ্ঞান পার্টির মূলহোতা মোঃ হাফিজার রহমান (৪৪) কে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ঘটনার সাথে জড়িত বলিয়া জানায়।

তার দেয়া তথ্য মতে ঘটনার সাথে জড়িত আরো ৫ জন আসামী ১। মোঃ মশিয়ার রহমান ভুট্টু (৪৫), পিতা- মৃত আব্বাস আলী, ২। মোছাঃ লিপি বেগম (২৬), স্বামী - মোঃ মশিয়ার রহমান ভুট্টু, ৩। মোঃ খোরশেদ আলম (১৯), পিতা- মোঃ মশিয়ার রহমান ভুট্টু, সর্ব সাং- কচুটারী, থানা- পরশুরাম, মহানগর রংপুর, ৪। মোঃ রুবেল মিয়া (৩২), পিতা- মৃত সালাম মিয়া, সাং- নিউ জুম্মাপাড়া, থানা- কোতয়ালী, মহানগর রংপুর, ৫। মোঃ রাজু মিয়া (৩০), পিতা- মৃত খলিলুর রহমান, সাং- জয়দেব মনাষপাড়া, থানা- গংগাচড়া, জেলা- রংপুর দেরকে গত ১০/০৭/২০২০ ইং তারিখ রংপুর মহানগর ও রংপুর জেলার বিভিন্ন এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত সকল আসামীদের ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানায় যে, গত ৩০/৬/২০২০ ইং তারিখ সন্ধার দিকে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হাফিজার রহমান এবং অন্যান্য সহযোগী আসামীগণ মামলার বাদীর জনৈক মোঃ মিজানুর রহমান বাড়ীতে যায় এবং তারা প্রথমে বাড়িটি রেকী করে। পরবর্তিতে মূল পরিকল্পনাকারী হাফিজার রহমান চেতনা নাশক ওষুধ সংগ্রহ করে এবং সংগোপনে ও সু-কৌশলে বাদীর বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করে চেতনা নাশক ওষুধের গুড়া খাবারের সাথে মিশিয়ে দেয়।

পরবর্তিতে বাদী ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উক্ত খাবার খেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লে গভীর রাতে আসামীগণ ঘরে প্রবেশ করে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায়।


প্রাথমিক তদন্তে আরো জানা যায় যে, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হাফিজার রহমান বেশ কিছুদিন আগে পরশুরাম থানাধীন কচুটারী এলাকায় এধরণের অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এ ছাড়াও সে পূর্বে এধরণের বেশ কয়েকটি অপরাধ করেছে এবং আসামী হাফিজার রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে।