গত ২৯-০৫-২০২১ খ্রি.,০০.৩০ ঘটিকায় উপ পুলিশ কমিশনার (ডিবি) জনাব কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান মহোদয়ের সার্বিক তত্বাবধানে ও নির্দেশনায়, সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) জনাব মোঃ ফারুক আহমেদ এর অপারেশন পরিকল্পনায় এসআই (নিঃ) মোঃ গোলাম মোর্শেদ, এসআই (নিঃ) মোঃ বাবুল ইসলাম, এসআই(নি) শ্রী সাবিন চন্দ্র মাহাতো, এসআই(নিঃ) মোঃ নাজমুল ইসলাম এবং সঙ্গীয় ফোর্সসহ নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ থানাধীন গাড়াগাঁও ইউনিয়নের পুর্ব দলিরাম কর্ণেল সাহেবের লিচুর বাগান থেকে প্রতারক চক্রের ০১ সদস্য মোঃ নুরে আলম @ রিপন(৪৫)-কে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার বিবরণীতে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামী ০১। মোঃ নুরে আলম @ রিপন(৪৫), পিতা- মোঃ বদির উদ্দিন, মাতা- মোছাঃ নুরজাহান, স্ত্রী মোছাঃ নাজমা বেগম, সাং- পুর্ব দলিরাম গনেশ, ইউপি- গাড়াগ্রাম, থানা- কিশোরগঞ্জ, জেলা-নীলফামারী বিভিন্ন সময় নিজেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান/রংপুর ডিসি অফিসের কর্মকর্তা পরিচয়ে রংপুর মহানগরীসহ বিভিন্ন জেলার লোকদের সরকারী চাকুরীদেয়ার কথা বলে বিপুল পরিমানের অর্থ আত্মসাৎ করে। উক্ত টাকা আত্মসাতের ভিত্তিতে গোয়েন্দা বিভাগ ডিবি টিম অভিযানে নামে। উক্ত অপরাধের বিষয়ে বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে অপরাধীকে সনাক্ত করে। পরবর্তীতে বিশ^স্ত সূত্রের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
ঘটনার তদন্তে আরো জানা যায় যে, বাদী মোঃ শাহাদত হোসেন (৪৮), পিতা-মৃত বাছের আলী, সাং- নিলাম খরিদা সদরা, থানা- কাউনিয়া, জেলা- রংপুর একজন নার্সারীর ব্যবসায়ী। বাদী বিভিন্ন দাপ্তরিক প্রয়োজনে রংপুর ডিসি অফিসে আসা যাওয়ার কারণে আসামী মোঃ নুরে আলম @ রিপন তাকে ডিসি অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তার সাথে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করে এবং এবং বলে যে, তার বাড়ি ধাপ মেডিকেল মোড়ে ও আসামী বাদীর মধ্যে কথপোকথোন এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে ফোন নম্বর আদান প্রদান হয়। কথাবার্তার এক পর্যায়ে আসামী বলে বড় বড় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে তার ভালো সম্পর্ক আছে এবং বাদীর যদি ডিসি অফিস এবং কোট সংক্রান্ত যদি কোন সমস্যা হয় এমনকি সরকারী চাকুরীতে নিয়োগ সংক্রান্ত কোন যদি বিষয় থাকে তাহলে তার সহিত যোগাযোগ করার কথা বলে। কথপোকথোনের এক পর্যায়ে বাদী মোঃ শাহাদত হোসেন (৪৮) আসামী তার আর্থিক সমস্যার কথা বলে। তখন গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ নুরে আলম @ রিপন বলে যে ডসি অফিসের কর্মচারীরা একটি সমবায় সমিতি আছে এবং বাদী চাইলে তাকে সেখান থেকে আসামী কম ঋণ গ্রহণের সুযোগ করে দিবে এবং বাহিরের লোকজন উক্ত সমবায়ে ১০% সুদে ঋণ গ্রহণ করে। আসামীর মাধ্যমে ঋণ নিলে আসামী তাকে ৮% সুদে লোন উঠায় দিতে পারবে। তখন বাদী আসামী মোঃ নুরে আলম @ রিপনের প্রস্তাবে রাজি হলে আসামী মোঃ নুরে আলম @ রিপন আমাকে প্রতি ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকায় ৮০০০/-(আট হাজার) টাকা সঞ্চয় অফিসে জমা দিতে হবে বলে জানায়। বাদী আসামী মোঃ নুরে আলম @ রিপন এর কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে ১২,০০,০০০/- (বার লক্ষ) টাকা লোন গ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করে। সেই মোতাবেক আসামী মোঃ নুরে আলম @ রিপন আমাকে বিকাশ নম্বর-০১৭৩৭-২২৪৮৮৫, ০১৮৭১-৩৪০১২৪ প্রদান করলে তার কথামতো বাদী ১২/১১/২০২০ খ্রি. হতে ০৬/০১/২০২১ খ্রি. তারিখ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে উল্লিখিত নম্বরে বিভিন্ন বিকাশের দোকান হতে মোট ৯৬,০০০/- (ছিয়ানব্বই হাজার) টাকা বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করে। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে বাদী আসামীকে ০৩/০১/২০২১ খ্রি. তারিখে ২৫,০০০/- টাকা, ০৬/০১/২০২১ খ্রি. তারিখে ২৫,০০০/- টাকা এবং ০৭/০১/২০২১ খ্রি. তারিখে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা প্রদান করে। এরপর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও লোন মঞ্জুর না হওয়ায় আসামীর নিকট বার বার ফোন করলেও সে ফোন রিসিভ করে নাই। পরিশেষে বাদী বাধ্য হয়ে আসামীর দেয়া তথ্য মতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, রংপুরে উপস্থিত হয়ে আসামী মোঃ নুরে আলম @ রিপন(৪৫ এর খোঁজ করলে সেখানকার লোকজন জানায় যে, ঐ নামের কোন লোক সেখানে কাজ করেনা। রংপুরে তার কোন বাড়িঘর ছিলনা। প্রকৃতপক্ষে তার নিজ এলাকা নীলফামারীতে সে প্রতারক হিসেবে পরিচিত।
এছাড়াও উক্ত আসামী মোঃ নুরে আলম @ রিপন(৪৫) এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় নানা ধরণের প্রতারণার অভিযোগ আছে। সে দীর্ঘ দিন থেকে ভুয়া নিয়োগ বাণিজ্য ও ভুয়া পুলিশ পরিচয়সহ নানা অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে বিভিন্ন কৌশলে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। তার পিসিপিআর যাচাই করে তার বিরুদ্ধে ৪ টি মামলা পাওয়া গেছে-
১. (186EF) দিনাজপুর এর দিনাজপুর সদর থানার এফ আই আর নং-১০/১৩৬, তারিখ- ০৪ ফেব্রæয়ারী, ২০২০; জি আর নং-১৩৬/২০২০, তারিখ- ০৪ ফেব্রæয়ারী, ২০২০; সময়- ০০.৫৫ ঘটিকা ধারা- ১৭০/১৭১/৪৬৭/৪৬৮/৪৬৯/৪৭১/৪২০/৪০৬/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০;
২. (1863C) দিনাজপুর এর দিনাজপুর সদর থানার এফ আই আর নং-৯/১৩৫, তারিখ- ০৩ ফেব্রæয়ারী, ২০২০; জি আর নং-১৩৫/২০২০, তারিখ- ০৩ ফেব্রæয়ারী, ২০২০; সময়- ১৬.৪০ ঘটিকা ধারা- ১৭১/৪২০/৪০৬/৩৮৫/৩৮৭ পেনাল কোড-১৮৬০
৩. (18JUC) নীলফামারী এর কিশোরগঞ্জ থানার এফ আই আর নং-৯, তারিখ- ১৫ ফেব্রæয়ারী, ২০২০; সময়- ১১.৩০ ধারা- ৪২০/৪০৬/৫০৬ পেনাল কোড-১৮৬০
৪. (183LA) রংপুর এর কোতয়ালী থানার এফ আই আর নং-৪, তারিখ- ০৫ ফেব্রæয়ারী, ২০২০; জি আর নং-১৯, তারিখ- ০৫ ফেব্রæয়ারী, ২০২০; সময়- ২০.৩৫ ঘটিকা ধারা- ১৭০/৪০৬/৪২০/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০