মুক্তাপানিসহ বিভিন্ন ভুয়া কোম্পানীর এজেন্ট নিয়োগের নামে রংপুর মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৫০০ (পাঁচশত) ব্যক্তিকে চাকরি দেওয়ার নামে প্রায় ৪ (চার) কোটির অধিক টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারক গ্রেফতার।
২০২০ সালে মুক্তাপানি ও টিএমএফ (তরিকুল, মোতালেব, ফিরোজ) ট্রেডার্স লিমিটেড নামে কোম্পানীর ভুয়া এজেন্ট নিয়োগের জন্য রংপুর বিভাগের সাতটি জেলা ও উপজেলায় (লালমনিরহাট, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, বিরামপুর) অফিস চালু করেন গ্রেফতারকৃত তরিকুল ইসলাম (৪০), পিতা- আব্দুস সাত্তার, গ্রাম- দামগাড়া, বারহট্রা শিবগঞ্জ, বগুড়া। পরবর্তীতে আসামী তরিকুল ইসলাম তার সহযোগীদের সহযোগিতায় মুক্তাপানি ও টিএমএফ (তরিকুল, মোতালেব, ফিরোজ) ট্রেডার্স লিমিটেড কোম্পানীর এজেন্ট নিয়োগ দেওয়া হবে মর্মে পত্রিকায় ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে রংপুর মহানগর সহ রংপুর বিভাগের ৬ শতাধিক ব্যক্তি মুক্তা কোম্পানির এজেন্ট ও কর্মী হওয়ার জন্য আবেদন করে। এরপর প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির প্রত্যেকের নিকট থেকে ৫০ হাজার থেকে ৩ লক্ষ টাকা করে গ্রহণ করে গ্রেফতারকৃত তরিকুলসহ তার সহযোগীরা। এভাবে তরিকুল পর্যায়ক্রমে প্রায় ৪ (চার) কোটিরও অধিক টাকা আত্মসাৎ করে । পরে মুক্তাপানির এজেন্টদের পণ্য সরবরাহ না করে তরিকুল ও তার সহযোগীরা রংপুর থেকে ঢাকা পালিয়ে যায়।
গত জানুয়ারি মাসে তরিকুলের নামে ভুক্তভুগীগণ প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে কোতয়ালী থানায় তরিকুলের নামে প্রতারণার অপরাধে মামলা দায়ের হয়। পরবর্তীতে পুলিশ কমিশনার, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ এর নির্দেশক্রমে মেট্রো ডিবি এর নিকট মামলাটি হস্তান্তর হয়।
রংপুর মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশ অত্র মামলাটি তদন্তভার গ্রহণ করে উল্লিখিত প্রধান প্রতারক তরিকুল ও তার অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যহত রাখেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯/০৩/২০২১ উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) জনাব কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান এর নির্দেশনা ও তত্ত¡াবধানে সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) জনাব মোঃ ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক জনাব এ বি এম ফিরোজ ওয়াহিদ, এসআই (নিঃ) গোলাম মোর্শেদসহ ডিবি পুলিশের একটি চৌকস দল বগুড়ার শিবগঞ্জের কালিতলা বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তরিকুলকে গ্রেফতার করে। উল্লেখ্য যে, উক্ত অভিযানে বগুড়া জেলা (শিবগঞ্জ থানা) সার্বিকভাবে সহায়তা করেন।
এছাড়াও গ্রেতারকৃত মোঃ তরিকুল ইসলাম বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চায়না কোম্পানীসহ বিভিন্ন বেনামী কোম্পানী এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/অফিসে (বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড) নিয়োগ দেয়ার নামে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। তরিকুলের ঢাকার নিকুঞ্জে একটি বিলাসবহুল বাসভবনে রয়েছে বলে জানা যায়।
উক্ত অপরাধের সাথে জড়িত অন্যান্য অপরাধীদেরও তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনা হবে। মামলাটির সার্বিক তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।