ইন্সপেক্টর জেনারেলে মহোদয়

igp_message
জনাব চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয় ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রি.বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। আইজিপি হিসেবে যোগদানের পূর্বে তিনি র‌্যাব ফোর্সেসের মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর ৮ম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি অত্যন্ত সততা, দক্ষতা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, জেলা, রেঞ্জ, ডিএমপি, এপিবিএন, সিআইডি ও সর্বশেষ র‌্যাবে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর দীর্ঘ গৌরবময় চাকুরিকালে তিনি ডিএমপি-তে সহকারী কমিশনার, এপিবিএন-এ সহকারী পুলিশ সুপার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিরাজগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলায় সার্কেল এএসপি, চাঁদপুর জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং ডিএমপি-তে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নীলফামারী জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন। ডিএমপি-তে উপ-পুলিশ কমিশনার, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে এআইজি (সংস্থাপন) ও এআইজি (গোপনীয়) এবং ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ছিলেন তিনি।

জনাব চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম (বার), পিপিএম পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ডিআইজি (অপারেশনস) ও ডিআইজি (প্রশাসন) এবং ঢাকা ও ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি ছিলেন। তিনি ময়মনসিংহ রেঞ্জের প্রথম ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালনের গৌরবের অধিকারী। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে অতিরিক্ত আইজি (এইচআরএম) পদ অলংকৃত করেছেন তিনি।

তিনি সিআইডি প্রধান (অতিরিক্ত আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবের পাশাপাশি বিভাগীয় পর্যায়ে ল্যাবের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেন, ফলে মামলার আলামতের ফরেনসিক পরীক্ষা দ্রুততর এবং জটিল মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্নের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। মামলা তদন্তে পুলিশ সদস্যদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তদন্তের মান বাড়াতে প্রশিক্ষণের ওপরও জোর দেন তিনি। এ লক্ষ্যে দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক দিয়ে পুলিশ সদস্যদেরকে ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থা ও মামলা তদন্ত সম্পর্কিত নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। ফলে সিআইডির মামলা তদন্তের মানের যথেষ্ট উৎকর্ষ সাধিত হয় এবং মামলা নিষ্পত্তির হারও বৃদ্ধি পায়।জনাব চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম (বার), পিপিএম ২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল বাংলাদেশ পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-এর মহাপরিচালকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় করোনা মোকাবেলায় র‌্যাবের অনবদ্য ভূমিকা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। তাঁর পরিকল্পনায় র‌্যাব উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে অপারেশনাল কার্যক্রমের পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক পোস্টার, ব্যানার, টিভিসি ও ডিজিটাল বিলবোর্ডে জঙ্গিবাদ বিরোধী বক্তব্য প্রচার করে। তার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ধর্মীয় চরমপন্থায় দিক্ষীত কিন্তু অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত হয়নি এমন সদস্যদেরকে পুনর্বাসন এবং সমাজের মূল ধারায় সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে “নব দিগন্তের পথে” নামক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। মোটিভেশনাল কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে সমাজের মূল ধারায় আত্মীকরণ এর মত ইনোভেটিভ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। তাঁর মেয়াদে র‌্যাব বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গী বিরোধী অভিযান সফলভাবে পরিচালনা করে। তাঁর নির্দেশনায় র‌্যাব মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার ও মাদকের বিস্তাররোধ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। সুন্দরবনকে বনদস্যুমুক্ত করার ক্ষেত্রে র‌্যাব সদস্যদের দুঃসাহসিক অপারেশনের ওপর ভিত্তি করে অপারেশন সুন্দরবন চলচ্চিত্র নির্মাণে তাঁর অনন্য ভূমিকা রয়েছে।

বাংলাদেশ পুলিশে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম)-এ ভূষিত হয়েছেন। তিনি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, লাইবেরিয়া এবং দারফুরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ১৯৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা থানার শ্রীহাইল গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্মাতকসম্মান ও স্মাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

জনাব চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম (বার), পিপিএম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক সভা-সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামে অংশ নিয়েছেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি বিবাহিত এবং তাঁর চিকিৎসক স্ত্রী সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত রয়েছেন। তিনি দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক।